মিরাজুন্নবী (সঃ) উদ্যাপন


মিরাজুন্নবী (সঃ) উদ্যাপন

মিরাজ এর প্রতিপাদ্যঃ  
পরিবার সমাজে সালাত (নামাজ) কায়েম করি। পবিত্র মিরাজ কী কেন? মিরাজ ছিল রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জীবনের উল্লেখযােগ্য এক মহা ঘটনা। হিজরতের বছর আগে ২৭শে রজব রাতে জিবরাইল (:) প্রিয় নবী (সা:)-কে বােরাকের পিঠে উঠিয়ে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত নিয়ে যান, সেখানে তিনি বিভিন্ন নবীদের সাথে সালাত (নামাজ) আদায় করেন। এরপর জিরাঈল (:) আবার তাকে ঊধ্বজগতের দিকে নিয়ে চলেন এবং সেখানে আকাশের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন মর্যাদাশীল নবী রাসূলের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সর্বশেষে সর্বোচ্চ আসমানে পৌঁছে মহান রবের সান্নিধ্য লাভ করেন। এটাই মিরাজ। 

 এই সাক্ষাতের সময় মহান রাব্বল আলামীন তাঁর হাবীবকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। দিন-রাতে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামাজ), পরে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত করে উম্মতে মােহাম্মাদীকে উপহার স্বরূপ প্রেরণ করেন। এরপর বাইতুল মাকদাস হয়ে মসজিদে হারামে ফিরে আসেন। 

 আল্লাহ পাক তার নবী রাসূলগণকে নবুয়তের গুরুদায়িত্ব পালনের উপযােগী করে গড়ে তােলার জন্য ট্রেনিং দেয়ার উদ্দেশ্যে তার সান্নিধ্যে ডেকে নিতেন।  

আল্লাহর নবী (.) ঊর্বালােক থেকে তাঁর উম্মতের জন্য যে নির্দেশনা নিয়ে এসেছিলেন (সমাজ থেকে অন্যায়, পাপ দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা) -সেই নির্দেশনার একটি অংশ হচ্ছে সালাত (নামাজ) ছাড়া ইসলামী সমাজ কাঠামাের ভিত্তি হিসাবে ১৪টি মূলনীতির নির্দেশনাও নিয়ে আসেন যা সূরা বানী ইসরাঈলে বর্ণিত আছে

পবিত্র মিরাজের শিক্ষাঃ 
 মিরাজে প্রাপ্তি সূরা বনী ইসরাঈলে উল্লেখিত ১৪টি মূলনীতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হই-

) একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত বা দাসত্ব করতে হবে আর কারাে দাসত্ব করা যাবে না।  
) সর্বাবস্থায় পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বৃদ্ধাবস্থায় তাদের সাথেউহশব্দটি পর্যন্ত বলা যাবে না। তাদের জন্য সবসময় আল্লাহ রাববুল আলামীনের শেখানাে ভাষায় দোয়া করতে হবে।  
) আত্মীয়-স্বজন, মুসাফির মিসকীনদের অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে
) অপ্রয়ােজনীয় খরচ করা যাবে না।
) অভাবগ্রস্তদের প্রয়ােজন পূরণে সক্ষম না হলে তাদের সাথে নরম সুরে কথা বলতে হবে
) গলার সাথে হাত বেঁধেও রাখা যাবে না ছেড়েও দেয়া যাবে না। অর্থাৎ কৃপণতা অপচয় কোনটাই করা যাবে না ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা উচিত।  
) দারিদ্রের আশংকায় সন্তান হত্যা করা যাবে না।  
) জিনা, ব্যভিচার করা তাে দূরের কথা তার নিকটেও যাওয়া যাবে না অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে অশ্লীলতা পরিহার করতে হবে।(ব্যভিচারের ধারে কাছেও যেওনা)
) এতিমের সম্পত্তির যথাযথ আমানত রক্ষা করতে হবে এবং বয়োঃপ্রাপ্ত হলে তাকে তা প্রদান করতে হবে
১০) কাউকে বিনা কারণে বা বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা যাবে না  
১১) সর্বাবস্থায় ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলতে হবে। 
 ১২) ওজনে কম-বেশী করা যাবে না।  
১৩) কারাে শােনা কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা যাবে না যে বিষয়ে নিজের জ্ঞান নেই। 
 ১৪) দুনিয়াতে অহংকারের পথে চলাফেরা করা যাবে না। বিনয় নম্রতার সাথে জীবন যাপন করার মাঝে কল্যাণ রয়েছে। আসুন-সবাই মিলে মিরাজের শিক্ষাগুলাে মেনে চলি। সুখী-সুন্দর ন্যায়ের পথে সমাজ গড়ে তুলি।


No comments

Theme images by Flashworks. Powered by Blogger.